লিউব্লিয়ানা, ৫ মে- স্লোভেনিয়ার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ৩ মে নতুন করে কেউই করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়নি। তবে গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়ে দুই জনের মৃত্যু...
লিউব্লিয়ানা, ৫ মে- স্লোভেনিয়ার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ৩ মে নতুন করে কেউই করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়নি। তবে গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়ে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে স্লোভেনিয়াতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯৬ এবং এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ২৪১ জন। এছাড়াও এখন পর্যন্ত স্লোভেনিয়াতে সর্বমোট ১৪৩৯ জনের শরীরে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ পড়েছে।
প্রতিবেশি রাষ্ট্র অস্ট্রিয়ার মতো ধীরে ধীরে স্লোভেনিয়াতেও মার্চ মাসের ১৯ তারিখ থেকে জারি করা জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে এতো দিন বিশেষ অনুমতি ব্যতিরেকে স্লোভেনিয়ার অভ্যন্তরে এক মিউনিসিপ্যালিটি থেকে অন্য মিউনিসিপ্যালিটিতে যাতায়াতের ব্যাপারে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিলো গত বৃহস্পতিবার থেকে সে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছে। পাশাপাশি আগামীকাল সোমবার থেকে নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে কফিশপ, বার এবং রেস্টুরেন্টগুলোকে খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গত ২৯ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন মিউজিয়াম, আর্ট গ্যালারি, থিয়েটার, লাইব্রেরিগুলোকেও পুনরায় চালু করে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি তবে স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে যে এই সপ্তাহের মধ্যে স্কুল, কলেজ, কিন্ডারগার্টেনসহ বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করা কতিপয় শিক্ষার্থীদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে এবং তাদের কোভিড-১৯ টেস্টের আওতায় আনা হবে। যদি সন্তোষজনক ফলাফল পাওয়া যায় তাহলে এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হতে পারে।
এছাড়াও পরিস্থিতি এ রকম স্থিতিশীল থাকলে মে মাসের শেষের দিকে যথাসময়ে স্টেস্ট মাতুরা এক্সাম অনুষ্ঠিত হবে। স্টেট মাতুরা এক্সামকে বাংলাদেশের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার সাথে তুলনা করা যেতে পারে। তবে কবে নাগাদ বাস কিংবা ট্রেনসহ গণপরিবহন সেবা আবার সচল করে দেওয়া হবে সে ব্যাপারে স্লোভেনিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। এছাড়াও পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত স্লোভেনিয়ার রাজধানী লুবলিয়ানাতে অবস্থিত দেশটির একমাত্র বিমানবন্দর ইয়োজে পুচনিক ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকেও সকল ধরনের ফ্লাইটের চলাচল বন্ধ থাকবে।
করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে স্টেম সেল থেরাপি কিংবা প্ল্যাজম থেরাপির কথা বলা হচ্ছে। বর্তমানে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় আলোচিত এ স্টেম সেল থেরাপি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়েছেন সাম্প্রতিক সময়ে এমন কোনও ব্যক্তির রক্ত থেকে প্লাজমা বা রক্তরস আক্রান্ত অন্য কোনও ব্যক্তির শরীরে প্রতিস্থাপনের মধ্য দিয়ে সে ব্যক্তিকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব বলে দাবি করা হচ্ছে। স্লোভেনিয়ার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথের ডিপার্টমেন্ট অব ইমিউনোলজি এবং ডিপার্টমেন্ট অব ভাইরোলজির সমন্বিত একটি গবেষণালব্ধ ফল পৃথিবীর অনেক দেশই অনুসরণ করার চেষ্টা করছে।
আপাতদৃষ্টিতে স্লোভেনিয়াতে সব স্বাভাবিক অবস্থার দিকে যাচ্ছে বলে দেশটির স্থানীয় অধিবাসীদের অনেকে মনে করলেও স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইয়ানেজ ইনশার গত বৃহস্পতিবার এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন খুব শীঘ্রই সব কিছু স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই। পাশাপাশি তিনি সবাইকে যথাসম্ভব সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন। তার আশঙ্কা, যথার্থ সতর্কতা অবলম্বন না করলে যে কোনও মুহূর্তে চেহারা পরিবর্তন করে গত শতাব্দীর মহামারী স্প্যানিশ ফ্লু ভাইরাসের মতো দ্বিতীয় ধাপে যে কোনও সময় আবার এ ভাইরাসটি ফিরে আসতে পারে।
লেখক: ইউনিভার্সিটি অব নোভা গোরিছার ফিজিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের শিক্ষার্থী
আর/০৮:১৪/০৫ মে